ভারতের উপর অতিরিক্ত ২৫শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে ট্রাম্প সরকার। আর তা নিয়ে যথেষ্ট চাপানউতোর চলছে বিশ্ব জুড়ে। আর তারপরই আয়োজিত হয়েছিল আলাস্কার প্রতীক্ষিত বৈঠক, যার ফলাফলের দিকে নজর ছিল সকলেরই। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এদিন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনের উপরে হামলা চলবে। অর্থাৎ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থায়ী মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যদিও বৈঠকের শুরুটা বেশ উষ্ণ অভ্যর্থনার মধ্যে দিয়েই হয়েছিল। তাছাড়া, একই বুলেটপ্রুফ লিমুজিনে বসতেও দেখা যায় পুতিন ও ট্রাম্পকে। সেই সঙ্গে দুজনে বেশ হেসে হেসে হাতও মিলিয়েছেন। কিন্তু এসবের কোনো কিছুই বৈঠকের উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি। বরং, শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের এই বৈঠকের পরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে ভারত।
যদিও ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থামানো। আর সে লক্ষ্য নিয়েই আলাস্কায় গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি! এমনকি, অতীতে পুতিনের সঙ্গে এ বিষয়ে ফোনেও কথা হয়েছিল তার। কিন্তু সেবারও কার্যসিদ্ধি হয়নি! যদিও বিশ্বের দুই শক্তিধর দেশের মধ্যে কেউই নিজেদের মধ্যে কোনো নতুন তিক্ততা তৈরি করতে চায় না। তবে, এদিন যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে পুতিন বলেন, রাশিয়াকে যুদ্ধের মূল কারণগুলো শেষ করতে হবে। আর এর থেকেও সকলে স্পষ্ট বুঝতে পারেন যে, আপাতত যুদ্ধের সমাপ্তি সম্ভব নয়। পাশাপাশি পুতিন আরও বলেন, পরবর্তী বৈঠক মস্কোতে হওয়া উচিত, যেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ভূমিকা সন্দেহজনক হয়ে যাবে।
এদিকে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগে রুদ্র মেজাজ দেখিয়ে ছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতি না মানলে নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বৈঠকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হননি পুতিন। এরপরই এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রতি সুর নরম করেন ট্রাম্প বলেন, ‘এখন এ সব নিয়ে ভাবছি না। দু’-তিন সপ্তাহ পরে হয়তো ফের ভাবব।’ এরপর সরাসরি নাম না নিয়ে ভারত প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়া খুব শীঘ্রই একটা ক্রেতা হারাতে চলেছে। ওরা ৪০ শতাংশ তেল কেনে, চিনও কেনে। আমি চাইলেই ওদের উপরে স্যাংশন চাপাতে পারি। কিন্তু চাপাচ্ছি না।’
জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে ট্রাম্প ক্রমাগত কথাবার্তা এবং মিডিয়ার সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী বেশি ছিলেন। অন্যদিকে, পুতিনের সঙ্গে তিনি মাত্র সাড়ে ৩ মিনিট কথা বলেন যেখানে তিনি শুধু বলেন যে, তিনি ন্যাটো এবং জেলেনস্কিকে বৈঠকের বিষয়ে জানানোর জন্য কিছু ফোন করবেন। যদিও বৈঠকে হার্ভার্ডের কিরিল দিমিত্রিভ-সহ অনেক প্রতিনিধির উপস্থিতিকে বিশেষজ্ঞরা বাণিজ্যিক সুযোগ হিসেবেও দেখছেন। কিন্তু সে সব কোনো কিছুর দিকেই নজর ছিল না ট্রাম্পের। তবে, সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই বৈঠকে আদতে ট্রাম্পের-ই হার হয়েছে। কারণ পুতিন অস্পষ্ট ভাষায় পরবর্তী আলোচনার জন্য সম্মতি জানিয়েছেন এবং তিনি যে যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন।