দিন কয়েক আগেই পুলিশ কর্মীদের স্ত্রীরা একটি সাংবাদিক বৈঠক ছেড়েছিলেন প্রেস ক্লাবে। সেখানে তাদের অভিযোগ ছিল, কেন পুলিশের বাড়ির মেয়ে-বৌদের হেনস্থা করা হয়। সেই সাথে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তারা। আর এরপরই ওই অভিযোগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিরোধী দলনেতা। সেই সঙ্গে একে একে সব ছবি-ভিডিও দেখিয়ে পুরো ঘটনার বৃত্তান্ত দিলেন তিনি। সোমবার একটি সাংবাদিক বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল বিরোধী দলনেতার তরফে, আর সেখানেই সবটা খোলসা করতে দেখা গেল তাকে।
এদিনের বৈঠকের শুরুতেই নবান্ন অভিযান নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে কড়া ভাষায় পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাকে আক্রমণ করেন তিনি। এরপরই তিনি বলে ওঠেন, “আজ সমস্ত পর্দা ফাঁস করব।” তারপর বিরোধী দলনেতা বলতে শুরু করেন, “আইন অনুযায়ী কখনোই পুলিকর্মীদের স্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করতে পারে না। তাই এর বিরুদ্ধে আমরা মামলা করব। ইতিমধ্যেই আমরা রাজ্যপালকে বিষয়টা জানিয়েছি এবং ওনাকে তদন্ত করতে বলেছি। এটা সার্ভিস রুলের অবমামনা এবং অফিসারদের স্ত্রীদের দিয়ে অভিযোগ করানো হয়েছে মূলত আমাকেই টার্গেট করে। এমনকি, বিরোাধী দলনেতা নিজে পুলিশকে অশালীন কথা বলছেন, এমন অভিযোগও সেখানে তোলা হয়েছে।”
এরপর তিনি আরও বলতে শুরু করেন, “কলকাতার CP নিজে একজন কুখ্যাত IPS। গোটা জঙ্গলমহলে অত্যাচার করেছেন। এই মনোজ ভার্মা ২০০৯, ১০, ১১-র আগে পর্যন্ত আদিবাসী ছেলেদের সকলকেই মাওবাদী তকমা দিয়ে তুলে এনে মারতেন। এমনকি, এই কুখ্যাত লোকটি সেদিন অভয়ার মায়ের উপরও অত্যাচার করিয়েছেন। পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে জড়ো করা হয়েছিল পুলিশকর্মীদের স্ত্রীদের। এরপর প্রেস মিট করার আগে ওদের ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল।” তিনি নাম ধরে বলেন, “একজন শান্তনু সিনহা বিশ্বাস ও আরও একজন দিজিতেশ্বর রাউত সেই ট্রেনিং দিয়েছিলেন। এদের দু’জনইকেই অবৈধভাব প্রমোশন দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।”
এরপর একে একে যে সকল পুলিশের স্ত্রীরা সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন, তাদের নাম পরিচয় জানান শুভেন্দু অধিকারী। তার দাবি, ওই দিন উপস্থিত ছিলেন আতাউর রহমানের স্ত্রী সালমা সুলতানাও। তিনি জানান, এই আতাউর রহমান বিজিএল এমটিএস ব্রিগেড হেড কোয়ার্টারে পোস্টেড। এছাড়া, ওইদিন সায়ন্ত দে-র স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা চট্টোপাধ্যায় দে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান তিনি। এছাড়াও ওই বৈঠকে ASI অতনু বাজের স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। যদিও ইতিমধ্যেই এই পুরো বিষয়টি তিনি রাজ্যপালকেও জানিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে ওই বৈঠক থেকে তিনি মানহানি মামলা করবেন বলেও সকলকে জানিয়েছেন। তবে, এই ঘটনার জল এখন কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার।