SIR-এর কথা উঠতেই ঠিক এভাবেই মেজাজ হারিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক ব্যানার্জী। কিন্তু কেন SIR নিয়ে প্রশ্ন এলেই তিনি ভয় পাচ্ছেন? ভুয়ো ভোটার নিয়ে কেন এত ভয় তৃনমূল যুবরাজের? তাহলে কি বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর যে অভিযোগ করেছেন তা সবই সত্যি? আজকের প্রতিবেদনে পুরো বিষয়টা জানাবো আপনাদের, চোখ রাখুন শেষ পর্যন্ত!
গত নির্বাচনে প্রায় সাত লাখ ভোটে ডায়মন্ড হারবার থেকে জিতেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই ফলাফল আসার পর থেকেই এই অঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিল বিরোধীরা। এরপর বহু সময় গড়িয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিতর্ক আজও থামেনি। সাত লক্ষ ভোটে তিনি কীভাবে জিততে পারেন এই প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে আদালতে ছুটে যান বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস। আর এবার সেই মামলা-ই তৃণমূল সাংসদের রাতের ঘুম কেড়েছে।
ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে কোর্টের পর্যবেক্ষণ সামনে এসেছে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুগত মজুমদার এই মামলায় চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এরপরই অভিষেকের আইনজীবী ফের সময় প্রার্থনা করেন। বিচারপতি প্রথমে ৫০০০ টাকা জরিমানা ধার্য করেন, পরে আইনজীবীর অনুরোধে তা মাফ করা হয়। আগামী ২৮-শে আগস্ট অভিষেকের শেষ সুযোগ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই তারিখেই নিজেদের বক্তব্য লিখিত আকারে জমা না দিলে আদালত এক্সপার্টি অর্ডার দেবে।
সাংসদ ভেবেছিলেন আদালতে উপস্থিত না থাকলে হয়তো খানিকটা সুযোগ পাওয়া যাবে, কিন্তু সেটা হয়নি। বিচারপতি জানান, আগামী ২৮শে আগস্ট-ই অভিষেকের শেষ সুযোগ, এদিনের মধ্যেই লিখিত উত্তর জমা দিতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তা নাহলে বিচারপতি সুগত মজুমদারের বেঞ্চ এক্সপার্টি অর্ডার দেবেন। অন্যদিকে বিরোধী পক্ষের আইনজীবী বিল্লদল ভট্টাচার্য EVM, সিসিটিভি ফুটেজ-সহ সমস্ত নির্বাচনী উপকরণ ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানোর আবেদন জানিয়েছেন যদিও এদিন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে।
এ বিষয়ে তৃণমূল সাংসদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে বলেন, ‘দেশটাকে নিজেদের সম্পত্তি ভেবে সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগিয়ে এখন মানুষের ভোটাধিকারটুকুও কেড়ে নিতে চাইছে। আমরা এটা করতে দেব না কালকের যেটা দেখেছেন আপনারা এটা সবে শুরু, আমি আগেও বলেছি আবারও বলছি যদি বাংলা থেকে একটা মানুষ যার ভোটার লিস্টে নাম আছে যে প্রকৃত ভোটার যদি তার নাম বাদ যায় এবং বিজেপি যদি ভাবে যে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে আমরা দেশটাকে আমাদের রাজনৈতিক সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করবো। যে ভাষায় বিজেপি বোঝে সে ভাষায় আমরা জবাব দিতে জানি। বাংলার একটা মানুষের যদি ভোটাধিকার কাড়ে তাহলে এক লক্ষ মানুষ নিয়ে নির্বাচন কমিশন ঘিরবো। বিজেপির কোনও নেতা বাঁচাবে না। বিজেপি ভালো করে জানে বৈমাতৃ সুলভ আচরণ বাংলার মানুষের প্রতি বিশেষ করে গত চার বছরে সাড়ে চার বছরে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর বাংলার মানুষের প্রতি তারা করেছে টাকা বন্ধ থেকে শুরু করে বাংলার মানুষকে বিভিন্নভাবে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে বাংলাদেশী বলা বাংলার মানুষ যদি ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পায় এদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।”
হ্যাঁ, এতেই বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল সাংসদ ঠিক কতটা চিন্তায় রয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, ছাপ্পা ভোটের এই মামলায় আদালতকে সঠিক তথ্য দিতে তৃণমূল সরকারের এত ভয় কিসের? তাহলে সত্যিই কি ভোট কারচুপি করেই জয় পেয়েছিলেন সাংসদ? তবে কি, তৃণমূলের যুবরাজ ভালো করেই জানেন অভিযোগ প্রমাণ হলেই সাংসদ পদ হারাবেন তিনি? উঠছে এমনই একাধিক প্রশ্ন। যদিও এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, কারণ তৃণমূল নেতার গদি বাঁচবে কিনা তা আগামী সুনানিতেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।