আদালতের রায়ের পর ১২% সুদ সহ কাদের কত টাকা করে ফেরত দিতে হবে

১২% সুদ-সহ টাকা ফেরত দিতেই হবে অযোগ্য প্রার্থীদের! কবে থেকে শুরু হচ্ছে টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া? দেখুন

স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ নিয়ে এখনও দিকে দিকে চলছে আন্দোলন। চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকদের ভবিষ্যত কি, সেই চিন্তায় দিশেহারা প্রার্থীরা। আর এসবের মধ্যেই মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দায়ের করা রিভিউ পিটিশন খারিজ করে স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এই নিয়োগ সম্পূর্ণ বে-আইনি। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে যে, ‘অযোগ্য’ বা ‘টেন্টেড’ প্রার্থীদের এতদিন পাওয়া বেতনও ফেরত দিতে হবে। আসলে সুপ্রিম কোর্টের মতে, এই অযোগ্য প্রার্থীরা যেহেতু দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছেন, তাই এটি একপ্রকার প্রতারণা। আর ঠিক সে কারণেই তাদের বেতন রাখার অধিকারও নেই।

উল্লেখ্য, SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন ২৫,৭৫৩ জন। তবে, তাদের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ৪৮৫ জন প্রার্থীকে সুদ-সহ বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশই দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। যদিও কাদের বেতন ফেরত দিতে হবে সে বিষয়ে খুব ভালোভাবে বিশদে জানিয়ে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বলা হয়েছে, সরকারি তালিকায় যাদের নাম ছিল না, অর্থাৎ প্যানেলের বাইরে থেকে যাদের নিয়োগ করা হয়েছে তাদের এই টাকা ফেরত দিতে হবে। পাশাপাশি যারা সাদা খাতা জমা দিয়ে অর্থাৎ ফাঁকা উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট জমা দিয়েই চাকরি পেয়ে গেছিলেন, তাদেরও সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। এমনকি, নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তালিকা থেকে নিয়োগ করানো হয়েছিল যাদের, তাদেরকেও ১২% সুদ-সহ সম্পূর্ণ বেতন ফেরত দিতে হবে।

সূত্রের খবর, নবম-দশম চাকরির ক্ষেত্রে একজন শিক্ষকের সর্বনিম্ন বেতন হয় ৪০ হাজারের কাছাকাছি। তিনি যদি ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মার্চ অবধি বেতন পান, সেক্ষেত্রে তা প্রায় ২৪ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছায়। তবে, বেতন যদি বাড়ে তাহলে তার পরিমাণও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে ১২% সুদ যোগ হলে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার মতো তাকে ফেরত দিতে হবে। এরপর বলি, একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে! এদের বেতন শুরু হয় ৪৪ হাজারের আশেপাশে। ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মার্চ অবধি ওই টাকা পেলে তা দাঁড়ায় প্রায় ২৬ লক্ষের কাছাকাছি। সেই সঙ্গে ১২% সুদ-সহ তাদের মোট প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে।

অন্যদিকে, গ্রুপ সি-র চাকরির ক্ষেত্রে ২৬-২৭ হাজার টাকা একেবারে শুরুতে বেতন হয়। আর সেই স্টার্টিং স্যালারি ধরে হিসেব করলে ২০২৪ অবধি প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা হবে। কিন্তু এখন তাদের সুদ-সহ ফেরত দিতে হবে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা। এদিকে সর্বনিম্ন ১৯ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন গ্রুপ ডি-র চাকরিজীবীরা। তাই এই বেতন অনুসারে ২০২৪ অবধি তাদের প্রায় ১১ লক্ষের মতো টাকা দাঁড়ায় এবং সুদ-সহ তাদের প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। তবে, এই সব টাকার অঙ্ক কিন্তু বাড়তে পারে, যদি কারোর বেতন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যদিও এ বিষয়ে অনেকের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের এমন রায়ের ফলে বহু চাকরিহারা প্রার্থীর উপর আর্থিক বোঝা সৃষ্টি হতে চলেছে। তাছাড়া, অধিকাংশ প্রার্থীকেই এই পরিমাণ অর্থ ফেরত দিতে হলে হয়তো সম্পত্তি বিক্রি করারও অবস্থা তৈরি হতে পারে। তাই এ বিষয়ে যদি উচ্চ আদালত দৃষ্টিপাত করে, তাহলে অনেকেরই সুবিধা হবে বলে মনে করছে নানা মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *