সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার ১৫ মাস পর ফের গ্রেফতার হয়েছেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। চলতি সপ্তাহের সোমবারই মুর্শিদাবাদে তার বাড়িতে হানা দেন ইডি অফিসাররা। যদিও তাদের দেখে বাড়ির ছাদ থেকে পানা পুকুরে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি, কিন্তু বিশেষ কিছু লাভ হয়নি তাতে। কারণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। যদিও ইডি আসার খবর পেতেই নিজের দু’টি মোবাইল ফোন বাড়ির পিছনের ঝোপে লুকিয়ে ফেলেছিলেন তিনি, কিন্তু সেই মোবাইল ফোন উদ্ধার করে নেন আধিকারিকরা।
কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক তচ্ছরুপ মামলায় ফের জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। যদিও দু’বছর আগে ২০২৩ সালের মে মাসে তারা এই তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন। সে সময়ও তার দু’টি মোবাইল ফোন বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করেছিল তদন্তকারী অফিসাররা। তবে, সেবার পরিবারের তরফ থেকে জীবনকৃষ্ণ সাহা-র ব্যাপারে কেউই মুখ খোলেননি। কিন্তু সদ্য গ্রেফতারির ঘটনার পর ছেলে প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বিধায়কের বাবা। জীবনকৃষ্ণ-র বাবা বিশ্বনাথ সাহার বলেন, ‘রেড পড়ার দরকার ছিল। ও প্রচুর সম্পত্তি করেছে। MLA হয়েই তো এসব করেছে। যা উপদ্রব, আমি তো থাকতেই পারব না যদি ওর কিছু না হয়।’
বিশ্বনাথ সাহা আরও বলেন, ‘জীবন বিধায়ক হওয়ার পর এত এত সম্পত্তি করেছে, মায়াকেও কাউন্সিলর করেছে। ওর বাড়িতে ED-র তল্লাশির প্রয়োজন রয়েছে। প্রচুর সম্পত্তি করেছে ওরা। এক সময় কিছুই ছিল না, একটা মিষ্টির দোকান ছিল শুধু। জীবন বিধায়ক হয়েই তো সব হল। আমার সঙ্গে ওদের বরাবরের দূরত্ব। ওদের বাড়ি এখন আর আমি যাই না। জীবন জামিন পেয়ে আসার পর থেকে আমায় ঢুকতে দেয় না। থানা থেকে জেলা সভাপতি সবাইকে জানিয়েছি। এমনকি, অনুব্রত মণ্ডলকেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু সবাই ওর বুলিই গাইছে।’
হ্যাঁ, বহুদিন ধরেই ছেলের সঙ্গে আর থাকেন না বিশ্বনাথ সাহা। বর্তমানে কর্মসূত্রে তিনি সাঁইথিয়ায় থাকেন। যদিও আগে তিনি বাড়ি যেতেন, তবে জীবনকৃষ্ণের সঙ্গে তার এক প্রকার মুখ দেখাদেখিই নেই। এমনকি, ছেলে জীবনকৃষ্ণের দ্রুত উত্থান চোখে ভাল ঠেকেনি তার বাবারও। গত সোমবার জীবনকৃষ্ণর বাড়ি-সহ মোট ৫ জায়গায় হানা দেয় ইডি। যে তালিকায় ছিল তৃণমূল বিধায়কের পিসি তথা বীরভূমের সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িও। এছাড়াও, তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার শ্বশুরবাড়ি মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের পিয়ারাপুর মধ্যপাড়াতেও এদিন তল্লাশি চালায় ED। তবে, ভোটের আগে এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার মিডলম্যানের কেস কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার।